ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে
ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে
আপনি কতদিন বেঁচে থাকেন তা অনেক কিছুর উপর নির্ভর করে। জীবন ও মৃত্যু আল্লাহর হাতে। ডাক্তাররা রোগের চিকিৎসা করে থাকে । চিকিৎসার মাধ্যমে অনেক রোগী ক্যান্সার থেকে সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন। ক্যান্সারের ধরন, ক্যান্সারের অবস্থান, প্যাথলজিক্যাল গ্রেড, ক্লিনিক্যাল স্টেজ, চিকিৎসার ধরন ইত্যাদির উপর নির্ভর করে রোগীর ফলাফল বলা যেতে পারে। কিন্তু কতদিন বাঁচতে হবে তা কোনো ডাক্তার বলেন না।
কিন্তু গ্রামের আড্ডায় এমন অনেক মূখরোচক গল্প শুনেছি যে “আমার মামাতো ভাইয়ের ক্যান্সার হয়েছে। ডাক্তার বলেছে রোগী মাত্র ২৮ দিন বাঁচবে, যা খেতে চাইবে রোগীকে তা খাওয়াবে। কিন্তু আল্লাহ না করুক, রাখে আল্লাহ মারে কে। কোন চিকিৎসা ছাড়াই 5 বছর রোগী বেঁচে আছে।” আমি এই ধরনের কথাবার্তা বিশ্বাস করি না, যদিও এটি আশ্চর্যজনক শোনাচ্ছে। কিন্তু অনেকেই এ ধরনের কথাবার্তা শুনতে পছন্দ করেন। [ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে]
কেন রোগীরা ক্যান্সারে মারা যায়?
উত্তর হলো ক্যান্সার হলো শরীরে টিউমারের মতো। শরীরের একটি স্বাভাবিক কোষ কোনো কারণে ক্যান্সার কোষে পরিবর্তিত হয়। তারপর এগুলোর একটিকে দুই, চার, ষোল, চৌষট্টি ভাগে ভাগ করে এভাবে অসংখ্য কোষ তৈরি হয়ে টিউমার তৈরি করে। এমনকি যে কারণে স্বাভাবিক কোষগুলি ক্যান্সার কোষে পরিণত হয় তা মুছে ফেলা হলেও, ক্যান্সার কোষগুলি নিজেরাই বৃদ্ধি পেতে থাকে।
ঔষধ প্রয়োগ করে ক্যান্সার সেল মেরে ফেলা যায়। সাথে স্বাভাবিক কোষেরও মৃত্যু হতে পারে। ক্যান্সার কোষ বিভিন্ন পথে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে বাসা বাঁধতে থাকে। শরীরের পুষ্টিতে ভাগ বসায়। তাই, রোগী রুগ্ন হতে থাকে। ক্যান্সার স্থান থেকে রক্তক্ষরণ হয়ে রোগী রক্ত শুন্য হয়ে পড়ে। ক্যান্সার কোষ থেকে সাইটোকাইন নিঃসৃত হয়ে রোগীর ক্ষুধামান্দ ও সাভাবিক কোষের ক্ষতি করতে থাকে। রোগী অনেকটা শুকিয়ে যায়।
ক্যান্সার স্থানে ঘা হয়ে পচে দুর্গন্ধ ছড়ায়। মাছি ডিম পাড়ে এবং পোকা পেলে। এটি ফুসফুস, লিভার এবং মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়ে এবং দ্রুত মৃত্যু ঘটায়। মুখ ও খাদ্যনালীতে ক্যান্সার হলে রোগী খাবার গিলতে পারবে না এবং অনাহারে মৃত্যুবরণ করবে। মলদ্বারে ক্যানসার হলে পায়খানার বাধার কারণে রোগীর মৃত্যু হয়।
>আরও পড়ুন- কিডনি ভালো রাখার উপায়
ক্যান্সার রোগীর মৃত্যুর লক্ষণ
একজন ক্যান্সার রোগী কতদিন বাঁচবেন তা আটটি উপসর্গ পর্যবেক্ষণ করে অনুমান করা যায়। নতুন এক গবেষণায় এ কথা বলা হয়েছে। গবেষণাটি টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের এমডি অ্যান্ডারসন ক্যান্সার সেন্টারের গবেষকরা পরিচালনা করে ছিলেন।
‘ক্যান্সার’ জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়ে ছিল, আগের বেশ কয়েকটি গবেষণায় শুধুমাত্র মৃত্যুর পথে থাকা রোগীদের শনাক্ত করার উপায় সম্পর্কে জানা ছিল।
ঐ গবেষণায়, গবেষকরা তাদের রোগীদের দিনে দুবার পর্যবেক্ষণ করেছেন। তারা রোগীর শরীর এবং মস্তিষ্কে 52 ধরনের পরিবর্তন শনাক্ত করেছে। এই ৮টি সমস্ত লক্ষণ প্রকাশিত হয়ে ছিল । পূর্ববর্তী গবেষণাগুলি নিশ্চিত করেছে যে তাদের মধ্যে কে মারা যাবে। পরীক্ষা করা 357 রোগীর মধ্যে 57 শতাংশ মারা গেছে। এবং যাদের 52 ধরনের উপসর্গ রয়েছে তারা পরবর্তী তিন দিনের মধ্যে মারা গেছেন। গবেষক ডেভিড হুই বলেন, যারা তিন দিনের মধ্যে মারা গেছেন তাদের মৃত্যুর তিন দিন আগে এই উপসর্গগুলো ছিল। উদ্ভাসিত লক্ষ্যগুলি হল:
- আলোর বৃদ্ধি বা হ্রাসে চোখের পিউপিল কোন রকম প্রতিক্রিয়া দেখায় না।
- কথা বলার সাথে সাথে মুখ-জিভের প্রতিক্রিয়া হ্রাস পায়।
- ভোকাল কর্ড থেকে একটি গুরগোল শব্দ আসে।
- দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পায়।
- প্রায়ই রোগী চোখের পাতা বন্ধ করতে পারে না।
- গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাক্টের উপরের অংশে রক্তপাত ঘটে, যে অঙ্গটি খাদ্য এবং পুষ্টি শোষণ করে।
- মাথা সামনে দিকে নুয়ে পড়ে।
- নাক থেকে ঠোঁটের দুই কোণে যে রেখা পড়ে (হাসির সময় এই রেখাটি তৈরি হয়) তার একটি প্রশস্ত ভাঁজ রয়েছে।
>আরও পড়ুন- ব্লাড ক্যান্সার লক্ষণ ও প্রতিরোধ করার উপায়