প্রাকৃতিক ভাবে চুল পড়া বন্ধ করার উপায় জেনে নিন
চুল পড়া বন্ধ করার উপায় কি এবং কিভাবে নতুন চুল গজাবে এসব নিয়ে আজকের আর্টিকেল চুল পড়া বন্ধের চেষ্টা করার আগে অবশ্যই পিছনের কারণ গুলো জানার খুবই গুরুত্বপূর্ণ কথা মনে রাখা ভাল। সাধারণত নারী পুরুষের দৈনিক 50 থেকে 100 টা চুল পড়া খুবই সাধারণত ব্যাপার। তবে এই চুল পড়া চোখে পড়ে না । কারণে একইসাথে মাথায় নতুন চুল গজাতে থাকে। চুল পড়ার সমস্যা তখনই বুঝা যায় যখন চুল গজানোর চেয়ে চুল মাত্রা মাত্রা অনেক বেশি হয়।
মাথার চুল পড়ছে কিভাবে বুঝবেন
- মাথা সামনের দিকে এবং স্ক্যাল্পে চুলের ঘনত্ব কমতে শুরু করে।
- প্রতিদিন 100 টাকা পর্যন্ত চুল পড়া স্বাভাবিক তবে চুল পড়ার পরিমাণ আগের তুলনায় বেড়ে গেল।
- মাথার ত্বকে খুশকি সমস্যা বেড়ে গিয়েছি বা স্ক্যাল্প ইনফেকশন সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
- ভূর চুল অথবা চোখের পাতা শর্বত্রই। চুলপড়া সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
হরমোনের কারণ
মানব দেহে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হলে চুল পড়াটা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। পুরুষের চেয়ে নারীরা হরমোনের কারণে চুল পড়ার সমস্যায় বেশি ভোগেন। সাধারণত গর্ভধারণ বাচ্চা জন্মদান মোপজ নির্দিষ্ট বয়সে মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়া তাছাড়া থাইরয়েড জনিত সমস্যার কারণে ও হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। যার ফলে নানা সমস্যার সাথে সাথে চুল পড়া অনেকটা বড় সমস্যা হিসেবে দেখা দেয়। তবে এসব কারণে চুল পড়ার সমস্যা ক্ষণস্থায়ী। হরমোনের ভারসাম্য তা ফিরে আসলে চুলের স্বাভাবিক বৃদ্ধি শুরু হয়।
জিনগত কারণ
চুল পড়ার পিছনে সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো মানব দেহের জিন। জিন হল মানবদেহের বংশগতির ধারক ও বাহক। আমরা অনেকের দেখি বাবার মাথায় টাক থাকলে দেখা যায় ছেলে মাথায় টাক পড়ে যায়। এটা জিন ও বংশগত কারণেও চুল পড়ার সবচেয়ে বড় উদাহরণ। নির্দিষ্ট বয়স সীমার পর প্রত্যেক মানুষের বংশগত কারণে চুল পড়া বাড়তে থাকে। শতকরা 50 ভাগ পুরুষ 40 বছর থেকে চুল পড়ার সমস্যায় ভুগতে শুরু করে। যার নাম হল অ্যান্ড্রোজেনিক অ্যালোপেচিয়া নারীদের ক্ষেত্রে বয়স সীমা ৭০ বছর।
ওষুধ সেবনের প্রভাব
বিভিন্ন ওষুধের কারণে অনেক সময় মাথায় চুল পড়ে যেতে পারে। অনেক সময় ক্যান্সার ডিপ্রেশন, হৃদরোগ, অ্যার্থ্রাইটিস ও উচ্চ রক্তচাপের ঔষধের কারণে চুল পড়ে যেতে পারে। তবে মনে হয় যদি মনে হয় যদি আপনার ওষুধের কারণে মাথার চুল পড়ে যায়। তবে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করবেন।
মানসিক চাপ
মানসিক চাপ চুল পড়ার অন্যতম প্রধান কারণ। কারণ মানুষের শরীরের সাথে মন ওতপ্রোতভাবে জড়িত। মনের উপর চাপ বাড়লে দেখবেন তার প্রভাব শরীরে ও পড়তে থাকে। অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা বা মানসিক চাপ সমস্যার সম্মুখীন হলে চুল পড়াখুবই স্বাভাবিক। এই সমস্যার দীর্ঘমেয়াদী অথবা স্বল্পমেয়াদী হতে পারে। তাই চুল পড়া বন্ধ করতে হলে শারীরিকভাবে সুস্থ তাকতে হলে মানসিক চাপমুক্ত থাকতে হবে।
রেডিওথেরাপি
রেডিওথেরাপি তথা কেমোথেরাপি এটি চুল পড়ার অন্যতম কারণ। এই রেডিওথেরাপির কারণে সবচেয়ে বেশি মানুষের চুল পড়ে যায়। অন্য কোন সমস্যার চেয়ে কেমোথেরাপির কারণে চুল পড়ার হার অনেক বেশি। এক্ষেত্রে প্রায়ই রোগীর মাথা সম্পন্নভাবে চুল শূন্য হয়ে যায়। কেমোথেরাপি শেষ হলে পরবর্তীতে চুল আর আগের মত সুন্দরভাবে গজায় না।
চুল বাধার উপায়
বাধার উপায় আসলে চুলপড়ার অনেক বড় কারন। নারীরা মূলত এটি বেশি মোকাবেলা করে থাকেন । মেয়েদের লম্বা চুল নানাভাবে বেঁধে রাখা যায়। তবে নারীরা প্রাতিষ্টানিক ও সামাজিক ভাবে নিজেকে আকর্ষণীয় করে তুলতে বিভিন্ন উপায়ে চুলে বেধে থাকে। তবে সেই বাধার উপায় যদি অস্বাভাবিক হয় তবে দীর্ঘমেয়াদী চুল পড়ার অন্যতম কারণ।
উপরোক্ত কারণগুলোর কারণ অধিকাংশ মানুষের চুল পড়ে যায়। তবে এর বাইরে কারও বিশেষ শারীরিক অবস্থা থাকতে পারে। শারীরিক জটিলতার কারণে চুল পড়া খুবই স্বাভাবিক। মনে রাখতে হবে যে কোন সমস্যায় রোধ করতে হলে আগে তার কারণ খুজে বের করা খুবই জরুরী। আর তেমনটা হয়ে থাকে শীঘ্রই বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সাথে পরামর্শ নিন।
চুল পড়া বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় খাদ্যভাস
চুলপড়া তখনই চোখে পড়ে যখন চুল বৃদ্ধির হাররের চেয়ে চুল পড়ার হার বেশি হয়। সেই জন্য চুলের স্বাভাবিক বৃদ্ধি বজায় রাখা খুবই জরুরী। চুলের বৃদ্ধিতে খাদ্যভাস অনেক ভূমিকা রাখতে পারে। চুল পড়া সমস্যা অনেক ভোগেন দেহের পুষ্টি জনিত সমস্যা কারণে। তবে চুলের বৃদ্ধিতে আমিষ জাতীয় চুলের বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। পুতুলের বিক্রি নয় বরং মাথার ত্বকের পুষ্টি জোগাতে ভিটামিন এ কার্যকারী ভূমিকা রাখে।
ডিম
চুলের স্বাস্থ্য রক্ষায় জন্য সবচেয়ে সহজলভ্য খাদ্যটি হচ্ছে ডিম। ডিম আমাদের অতি নিত্যদিনের খাদ্য তালিকার অংশ। ডিম হলো আমি জাতীয় খাদ্য। আর চুলের ফলিকলগুলো আমিষ দ্বারা গঠিত। তাই চুলের বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। সেই সঙ্গে রয়েছে ডিমের মধ্যে বায়েটিন। এটি চুলের অতি প্রয়োজনীয় কেরাটিন আমিষ উৎপাদন সহায়ক।
ডিমের কুসুম ভালো করে ফেটিয়ে নিন। তারপর চুলের গোড়ায় লাগান 30 মিনিট অপেক্ষা করে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
বাদাম
বাদাম আমাদের দৈনিন্দিন খাদ্যাভাসে সাথে জড়িত নয় তবে বিশেষভাবে চুলের প্রতি যত্নবান হতে হলে আপনার উচিত বাদাম খাওয়া। তবে সকল বাদামে একই ধরনের পুষ্টি গুণ নেই।
মেথির ব্যবহার
পিঁপড়া বদ্ধ ঘর তার একটি কার্যকরী উপাদান হলো মে যা চুল খুব দ্রুত লম্বা করতে সাহায্য করে। আপনি যদি চুল পড়া বন্ধ করতে চান এবং নতুন চুল গজাতে চান তাহলে মেথির ব্যবহার শুরু করুন। মেথির মধ্যে রয়েছে পর্যাপ্ত পুটিন মাথার ত্বকে রক্ত চলাচল বাড়াতে কাজ করে। এছাড়াও এতে রয়েছে ভিটামিন সি, আয়রন ও পটাশিয়াম। এইসব উপাদান চুলের অকালপক্বতা রোদে কাজ করেন। একই সাথে চুল ঘন এবং মসৃণ।
দুই চামচ মেথি সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। তারপর সকালে মেথি বেটে তার সঙ্গে দুই থেকে তিন ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে নিন মিশ্রণটি মাথায় রেখে অপেক্ষা করুন ৩০ মিনিট। তারপর সেম্পু করে নিন। এতে করে চুলের গোড়া শক্ত হয়ে চুল পড়া বন্ধ হবে। সপ্তাহে একদিন ব্যবহার করলে ভালো উপকার পাবেন।
পেঁয়াজের রস
চুল পড়া বন্ধ করতে পেঁয়াজের রস অসাধারণ কাজ করে। পেঁয়াজের রস দিয়ে চুল পড়া বন্ধ হবে তাইনা নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। গোসলের এক ঘণ্টা আগে পেঁয়াজের রস ঘষে ঘষে চুলের গোড়ায় লাগান।
নারিকেল তেল
নারকেল তেল সামান্য গরম করে চুলের গোড়ায় মেসেজ করুন। এক ঘন্টা পর ধুয়ে ফেলুন।
প্রতিদিন যা খাওয়া প্রয়োজন
চুল পড়া বন্ধ করতে হলে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিনসমৃদ্ধ ও আঁশজাতীয় খাবার খেতে হবে। যেমন শাকসবজি ও তাজা ফল রাখবেন প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ওমেগা থ্রি ফ্যাট এসিডযুক্ত খাবার রাখবেন। ডিম, গাজন অ্যাভোকাডো এসব খাবার থেকে এই উপাদান পাবেন।
চুল পড়া বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ
চুল পড়া বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় খাদ্যভাস এর পাশাপাশি কিছু পন্থা অবলম্বন করতে হবে। অতি সাধারণ কিছু পন্থা অবলম্বন করে উল্লেখযোগ্য হারে চুল পড়া কমানো যায়।
নিয়মিত মাথা পরিষ্কার করা
অপরিষ্কার মাথার চুল পড়ার অন্যতম কারণ । মাথার চুল পরিষ্কার রাখতে কোনো অবহেলা করা যাবে না। মাথার চুল পরিষ্কার রাখতে প্রতিদিন গোসল করুন। নিয়মিত মাথায় শ্যাম্পু ব্যবহার করুন তবে সেম্পু যেন অতিরিক্ত কঠোর না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন। একইসাথে শ্যাম্পু পরে কন্ডিশনার ব্যবহার করবেন। অনেকে মানসম্মত সেম্পু নির্বাচন করতে ব্যর্থ হয়। যদি সেম্পু নির্বাচন করতে না পারেন। সে ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
সঠিক ভাবে চুল আঁচড়ানো
সঠিক ভাবে চুল না আঁচনোর ফলে অনেক সময় চুল পড়ে যেতে পারে। চুল আঁচড়ানো সবচেয়ে ক্ষতিকারক দিক হল ভেজা চুল আঁচড়ানো। কারণ ভেজা অবস্থায় চুল সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় থাকে তবে ভেজা চুল আঁচড়াতে হয় হয় তবে অনেক চওড়া চিরুনি ব্যবহার করা উচিত। তাছাড়া চুলে জট লেগে তা আংগুল দিয়ে ছাড়ানো উচিত চিরুনি ব্যবহার করা উচিত না।
চুল শুকাতে হেয়ার ড্রায়ার পরিত্যাগ
সুগার কেয়ার ডায়াল করা খুবই ক্ষতিকারক কাজ অনেক সময় দেখা যায় কর্মজীবী মহিলা সাধারণত তারাতারি চুলকাতে এইসব যন্ত্রের ব্যবহার করে থাকে। খুব দ্রুত চুল শুকালে চুলের প্রোটিন গুলো দুর্বল হয়ে পড়ে। তাছাড়া চুল বারবার শুকালে ও বারবার বিজালে চুলের উপর খারাপ প্রভাব পড়ে। তাই যতটা সম্ভব চুল স্বাভাবিকভাবে শুকানোর চেষ্টা করবেন।
চুল পড়া বন্ধ করার তেলের নাম
নারকেল তেল স্বাস্থ্য রাস্তায় দারুন কাজ করে। এটি চুলের ক্ষতি হওয়া অধিকাংশ কমায় এবং অতিবেগুনি রশ্মি থেকে চুলকে রক্ষা করে। নারকেল তেলে রয়েছে লরিক এসিড। এবং লরিক এসিড আমিষকে চুলের সাথে মিশ্রিত করতে সাহায্য করে। এছাড়া নারকেল তেল মাথায় ঘষাতে রক্তসঞ্চালন ভেড়ে যায়। এটি চুল বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।