হার্টের রোগীর খাবার তালিকা - best foad
বর্তমান সময়ে হার্টের রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এই সঙ্গে বেড়ে চলেছে দুশ্চিন্তা কারণ হার্টের অসুখ হলে নিয়মিত সঠিক খাদ্যাভ্যাস নির্ণয় ও নিয়ম মাফিক চলাফেরা করতে হয়। এবং কি কি খাওয়া যাবে এবং কি খাওয়া যাবে না এগুলা নিয়ে দুশ্চিন্তা থাক। সাধারণত মধ্য বয়সী ব্যক্তির হাতে সময় বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন। নারী-পুরুষ উভয়ের মধ্যে আক্রান্ত হওয়ার হার ব্যাপক। সেজন্য হার্টের রোগে আক্রান্ত হলে নিয়মমাফিক চলাফেরা করা উচিত। সেজন্য আজকের পোস্টটি হার্টের রোগীর খাবার তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। আশা করি পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ে আপনার খাবারের তালিকা প্রস্তুত করতে পারবেন।
হার্ট কি
রক্ত সংবহনতন্ত্র যে অঙ্গটি পাম্পের মত সংকোচন প্রসারণ এর মাধ্যমে সারা দেহে রক্ত সরবরাহ করে তাকে হার্ট বা হৃদপিণ্ড বলা হয়। এ বান্টি একান্তে জীবনে রয়েছে তাদের জীবন তাদের বিভিন্ন অংশকে শিরার মাধ্যমিক আনিতো রক্ত ধমনীর মাধ্যমে সাহায্য সারাদেহে পাঠায়। একজন সুস্থ মানুষের জীবন দশায় হৃদপিন্ডের গড়ে 2600 মিলিয়ন বার স্পন্দিত হয়।
>আরও পড়ুন- টেস্টোস্টেরন হরমোনের কাজ কি ? এর পরীক্ষা এবং চিকিৎসা
হার্টের রোগীর খাবার তালিকা।
সাধারণত মধ্যবয়সী ব্যক্তিরা হার্টের সমস্যায় ভুগে থাকেন। নারী-পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রে এই রোগে আক্রান্ত হওয়া অত্যন্ত ব্যাপক। এইসব রোগীদের সম্পন্ন নিয়মমাফিক চলাফেরা করতে হয় এবং নিয়মমাফিক খাবার গ্রহণ করতে হবে। তাই আজকের আর্টিকেলে আমরা জানাবো হার্টের রোগীর খাবার তালিকা এবং কি কি খাবার খেতে হবে এবং কি কি খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে।
হার্টের জন্য উপকারী খাবার
- মাছ হার্টের রোগীদের জন্য খুব ভালো উপকারী। তাই প্রতিদিনের খাবার তালিকায় নিয়মিত মাছ থাকতে হবে।
- সবুজ সবুজ শাকসবজি ফলমূল নিয়মিত খেলে হার্টের রোগ থেকে দূরে থাকা যায়। আর যারা অলরেডি এ রোগে ভুগছেন তাদের ব্যক্তিভেদে দৈনিক দুই থেকে তিন পদের ফল খেতে হবে। এছাড়া ও হার্টের রোগীদের খাদ্য তালিকা দৈনিক সবুজ শাকসবজি রাখতে হবে।
- প্রতিদিন নিয়মিত পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। অল্প পরিমাণে পানি পান করলে এমনি হার্টের উপর চাপ পড়ে। আর যদি রোগ ধরা পড়ে তাহলে পানি পানের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে হবে।
- এ ছাড়া মুরগির মাংস, মুরগির ডিম, গরুর দুধ খেলে হার্টের উপকার হবে। সেই সাথে ডাল ও দৈনিক খাওয়ার তালিকায় রাখা যায়।
- রান্নার তেল হিসাবে অলিভ অয়েলের ব্যবহার সবচেয়ে ভালো। অন্যান্য তৈলের বদলে অলিভ অয়েল তেল দিয়ে রান্না করলে হৃদরোগের পাশাপাশি সকল রোগের জন্য বেশ ভালো হয়। তাছাড়া পরিবারের সবাই সুস্থ থাকতে পারবেন।
- মিষ্টি ফল যেমন- পাকা আম, পাকা কলা, পাকা পেঁপে ইত্যাদি।
- পেয়ারা খাবারের সাথে ও অন্যান্য সময় সালদ খেতে হবে।
- কাঁচা ছোলা বা বুট হৃদরোগের খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠার পর খাওয়া হার্টের জন্য খুবই উপকারী।
- টক জাতীয় ফল বিশেষত খোসাসহ ফল যেমন পেয়ারা, জাম্বুরা, বড়ই, আমলকি ইত্যাদি
- ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস রোগের গাইডলাইন অনুযায়ী খেতে হবে।
এছাড়া হার্টের রোগীদের খাদ্য তালিকা প্রস্তুত করার আগে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে তিনবেলা খাদ্য তালিকা তৈরি করা উচিৎ কেননা রোগীর বয়স সমস্যার ধরণ আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে দৈনিক খাদ্য তালিকা তৈরি করা হয়। তাছাড়া হার্টের রোগীদের নিয়মিত হাঁটা চলাফেরা করার অভ্যাস করতে হবে। ভোরে উঠে হাঁটা হাঁটি করা হার্টের রোগের জন্য বিশেষ ফলদায়ক ও ফলপ্রসূ। এছাড়া হালকা শরীরচর্চা ব্যায়াম তাদের শারীরিক ও মানসিকভাবে চাঙ্গা করে তোলে। মেডিসিন নির্ভর করার চেয়ে নিয়ম কানুন মেনে জীবন পরিচালনা করা শ্রেয়।
হার্টের জন্য ক্ষতিকর খাবার
ট্রান্সফ্যাট যুক্ত খাবার হার্টের রোগীদের জন্য অত্যন্ত বিপদজনক। নিত্যদিনের ভা জা পোড়া ফাস্টফুড জাংকফুড কুড়কুড়ে মচমচে কেনা খাবারের বেকারি ফুড ইত্যাদি প্রচুর পরিমাণ ট্রান্সফ্যাট থাকে। আর সে ট্রান্সফ্যাট প্রতিনিয়ত রক্তের খারাপ কোলেস্টেরলের তা বাড়িয়ে দেয়। যার ফলে রক্তের কোলেস্টেরল কমে গিয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। সেইজন্য হার্টের রোগীদের খাদ্য তালিকায় ফাস্টফুড, পিৎজা, বেকারি ফুড, বিস্কুট, পাই এবং কেক এইগুলো বাদ দিতে হবে।
- হার্টের রোগীর খাবার তালিকা থেকে গরুর ছর্বি বাদ দিতে হবে। এছাড়া চর্বিযুক্ত খাবার ঘি ডালডা বা বাটার এই গুলার সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাগ করতে হবে। খাদ্যতালিকায় চর্বিযুক্ত খাবার বাদ দিয়ে সাজিয়ে নিতে হবে।
- খাসির মাংস, গরুর মগজ, চিংড়ি মাছ, গরু ও খাসির কলিজা খাওয়া যাবে না।
- মাছের ডিম খাওয়া যাবে না বলে অনেক বিশেষজ্ঞ পরামর্শ দিয়েছে। তাই মাছের ডিম এড়িয়ে চলতে হবে।
- ডিমের কুসুম খাওয়া যাবে না একদমই। ডিমের কুসুম আপনারা যতই ভালো লাগুক না কেন তা এড়িয়ে চলতে হবে।
- সয়াবিন তেল ও সরিষার তেল দিয়ে রান্না না করা উত্তম।
- বাহিরে গিয়ে মুড়ি চানাচুর ফুচকা এগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
- টেস্টিং সল্ট বা অতিরিক্ত লবন খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
তাছাড়া চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী হার্টের রোগীর খাদ্য তালিকা তৈরি করা উচিত। কেননা রোগীর বয়স রোগের ধরন আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে দৈনিক খাদ্য তালিকা প্রস্তুত করা উচিত। ডাক্তার আপনাকে সম্পূর্ণ গাইড লাইন দিয়ে খাদ্য তালিকা প্রস্তুত করতে সাহায্য করবে।
>আরও পড়ুন- এই ৭ টি খাবার খেলে হৃদরোগ হবে না || হার্টের ব্লক খুলে যাবে
হার্ট কিভাবে কাজ করে
হার্ট হচ্ছে আপনার হাতের মুষ্টি বদ্ধ সমান একটি মাংসপেশি। এটা মিনিটে প্রায় ৭০বার স্পন্দিত হয়। রক্ত হার্ট থেকে ফুসফুসে যায় এবং অক্সিজেন সংগ্রহ করে। এই অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত আবার হাটের মধ্যে ফিরে আসে এবং ধমনীতন্ত্রের মাধ্যমে সঞ্চালিত হয়ে শরীরের সব অঙ্গ পতঙ্গ অক্সিজেন সরবরাহ করে। তারপর শিরার মাধ্যমে এই রক্ত আবার হার্টে ফিরে আসে এবং হার্ট থেকে আবারও ফুসফুসে সঞ্চালিত হয়। আর এই সঞ্চালন প্রক্রিয়াকে বলা হয় রক্ত সঞ্চালন।
হার্টের ওজন কত?
একটি স্বাভাবিক হার্টের ওজন প্রায় 300 গ্রাম। একজন মহিলার হার্টের ওজন একজন পুরুষের তুলনায় প্রায় এক তৃতীয়াংশ কম। একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের হার্টের ওজন প্রায় 280-340 গ্রাম এবং একটি মহিলা হার্টের ওজন প্রায় 230-280 গ্রাম।
>আরও পড়ুন- খুশকি দূর করার উপায়। চিকিৎসা, ঔষধ-শ্যাম্পু
হার্টের ব্যথা কোথায় হয়
- খাটের ব্যাথা বুকের ঠিক মাঝখানে হয়
- বুকের বা পাশেও মোচড় দিয়ে ব্যথা হতে পারে
- মনে হবে শ্বাস আটকে যাচ্ছে
- বুকে খুব চাপ অনুভব হবে
- ব্যাথার ধরণ তীক্ষ্ণ
- কুল কুল ঘাম হতে পারে
- মাথা ঘুরতে থাকে
- বমি বমি অনুভব হতে পারে
হার্টের সংকোচনকে কী বলে?
হৃৎপিণ্ডের প্রকোষ্ঠের সংকোচনকে বলা হয় সিস্টোল এবং প্রসারণকে বলা হয় ডায়াস্টোল। হৃৎপিণ্ডের সংকোচন (সিস্টোল) এবং একটি প্রসারণ (ডায়াস্টোল) কে একসাথে হার্টবিট বা হৃৎস্পন্দন বলে।
হৃদপিন্ডের গঠন
- দেহের যে প্রকোষ্টময় পেশল অঙ্গের নিরিবিছিন্ন ছন্দময় সংকোচন-প্রসারণের কারণে সমগ্র দেহে রক্ত সংবহিত হয় তাকে হৃদপিণ্ড বলে।
- রক্তকে রক্ত বাহিকার ভিতর দিয়ে সঞ্চালনের জন্য হৃদপিন্ডে মানবদেহের পাম যন্ত্র রূপে কাজ করে
- একজন সুস্থ মানুষের জীবন দশায় হৃদপিন্ডের গড়ে 2600 মিলিয়ন বার স্পন্দিত হয় ভেন্টিকল নিলয় প্রায় 155 মিলিয়ন লিটার বা দেড় লক্ষ টন রক্ত বের হয় ।
- একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের হৃদপিন্ডের ওজন 250 থেকে 390 গ্রাম ও মহিলাদের 200-275 গ্রাম
- ভ্রূণ অবস্থায় মাতৃগর্ভে থাকা অবস্থায় ৬ সপ্তাহে থেকে হৃদস্পন্দন শুরু হয় এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত স্পন্দন চলতে থাকে।
>আরও পড়ুন- হার্টের সমস্যার লক্ষণ ও প্রতিকার