কিডনি রোগের ঔষধ কি?
কিডনি রোগ হচ্ছে নীরব ঘাতক এটি স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেয়। জীবনযাপন চলাফেরা ও খাদ্যভ্যাস ব্যাপক পরিবর্তন আনতে হয়। নানা কারণে কিডনির কার্যকারি একেবারে কমে গেলে একজন মানুষ বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা মুখে পড়েন। তাছাড়া কিডনি একেবারে অকার্যকর হয়ে গেলে মৃত্যু অনিবার্য।
মানবদেহে অত্যান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হচ্ছে কিডনি । বাংলায় তাকে বৃক্ক বলা হয়। কিডনি শরীরের ভারসাম্য আনতে সাহায্য করে। কিডনি রক্তে উপস্থিতি দূষিত পদার্থ গুলির পরিশোধন করে এবং মূত্র তৈরি করে সেগুলো দেহ থেকে বের করে দেওয়া ব্যবস্থা করে। একজন অসুস্থ বা অকার্যকর কিডনির কারণে একজন মানুষ দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক আক্রান্ত হয়ে দুকে দুকে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হয়। সেইজন্য অন্যান্য অঙ্গ পতঙ্গ সুস্থ রাখার পাশাপাশি কিডনি সুস্থ রাখা জরুরী।
কিডনি রোগের লক্ষণ
কিডনি রোগের ঔষধ কি সাধারণত প্রাথমিক পর্যায়ে কিডনি রোগের তেমন কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায় না। আস্তে আস্তে কিডনির কার্যক্ষমতা কমতে থাকলে লক্ষণগুলো প্রকাশ পেতে সাহায্য করে।
বিশেষ করে পায়ের পাতায় পানি জমে যাওয়া কিডনি রোগের এক বিশেষ লক্ষণ। কিডনি সমস্যা থাকলে বারবার প্রস্তাব পেতে পারে। দিনে ৬ থেকে ১০ প্রস্রাব করা স্বাভাবিক তবে এর বেশি হলে অবশ্যই আপনাকে ডাক্তারের পরামর্শ শরীরের ওজন হ্রাস পাওয়া, শরীরের বিভিন্ন অংশে হাত পা মুখ পানি জমে ফুলে যাওয়া, ক্ষুধামন্দা, প্রস্রাবের পরিমাণ হ্রাস পাওয়া বা প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়া। শরীরে ঘুম আসা শরীরের ক্লান্তি ভাব লাগা বা অসুস্থতা বোধ করা, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ চুলকানি হওয়া, মাঝেমধ্যে মাথা ব্যাথা হওয়া, ইত্যাদি লক্ষণ গুলো কিডনি ডিজিজেস এর শেষ পর্যায়ে এসে প্রকাশ পেতে শুরু করে।
কিডনি রোগ প্রতিকারের উপায়
যারা কিডনিতে কোন না কোন সমস্যা বুগছেন অথবা যারা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন তাদের রোগ মুক্তি জন্য কয়েকটি উপায় রয়েছে।
আমাদের দেশের শতকরা 80 ভাগ কিডনি ৩ টি কারনে নষ্ট হয়ে থাকে যেমন। যাদের উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং নেফ্রাইটিস আছে তাদের কিডনি রোগের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। এই তিনটির রোগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেই শতকরা 80 ভাগ কিডনি রোগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তাছাড়া যাদের গন গন কিডনিতে ইনফেকশন হয় যাদের পাথর জনিত রোগ আছে। তাদের অতি সহজে চিকিৎসার মাধ্যমে রোগ নিরাময় করা সম্ভব। একটু সতর্কতায় থাকলে কিডনি ফেইল থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন
যারা রোগী আছেন তাদের প্রত্যেকের জন্য একনিষ্ঠ পরামর্শ হচ্ছে যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তারা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখবেন। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন অতি ওজন শরীরের জন্য ক্ষতিকর। যাদের উচ্চরক্ত চাপ রয়েছে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখার চেষ্টা করুন। রক্তচাপ বলি আর ডায়াবেটিস বলি সবিই শুরু হয় ওজন বেশি থেকে। তাছাড়া কোলেস্টেরল বেড়ে গিয়ে হৃদপিণ্ড এবং রক্তনালির রোগ হতে পারে সবচেয়ে বেশি ওজন বৃদ্ধিজনিত কারণ।
নিয়মিত ব্যায়াম
কিডনি ভালো রাখার একটি ভালো উপায় হচ্ছে নিয়মিত ব্যায়াম করা রিক্সা বা গাড়িতে না ই উঠে হেঁটে অফিসে বা আপনার কর্মস্থলে যাওয়ার চেষ্টা করুন। হাটার ফলে আপনার যে শারীরিক ব্যায়াম প্রয়োজন তা পূরণ হয়। ব্যায়ামের ফলে অঙ্গ পতঙ্গ গুলো সচ্ছল ভাবে কাজ করে।
ধূমপান থেকে বিরত থাকুন
ধূমপান পরিহার করতে হবে কারণ ধূমপান একদিকে যেমন কিডনির ক্ষতি করে অন্যদিকে রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয় ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রণ করে তুলে। ব্রেইনের কার্যকারিতা নষ্ট করে ফেলে মানুষের জীবনীশক্তি কমিয়ে ফেলে এবং ক্যান্সার রোগের মত মরণব্যাধি রোগ সৃষ্টি হয়। তাই আপনি শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে ধূমপান থেকে বিরত থাকুন।
কোলেস্টেরল কমানো
যাদের রক্তে কোলেস্টেরল বেশি থাকে এবং অন্যান্য প্রকার যেমন ট্রাইগ্লিসারাইড, এলডিএল এগুলা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য খাদ্যাভাস পরিবর্তন করার কোনো বিকল্প নেই চর্বি জাতীয় খাবার পরিহার করুন। মাছের চর্বি খাওয়া যায় এতে কোনো অসুবিধা নেই। তবে চিংড়ি মাছের মাথা এবং মাছের মগজ না খাওয়া ভালো।
কিডনি রোগের ঔষধ কি
অনেকেই কিডনি রোগের ঔষধ কি এবং কি ওষুধ খেলে কিডনি রোগ ভালো হয় তা জানতে চাই। প্রাথমিক অবস্থায় রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসা করলে রোগ নিরাময় বা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব কিডনি খারাপ হওয়ার দ্রুততাকে ধীর গতিতে সম্পন্ন করা যায়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতির সঙ্গে হোমিওপ্যাথিক উন্নতি সাধন করছে হোমিওপ্যাথিক ওষুধ সেইসাথে গুনগতমান উন্নত হয়েছে।
সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় করে ওষুধ প্রয়োগ করলে দ্রুত ফল পাওয়া যায় কিডনি রোগের ক্ষেত্রে যেসব হোমিওপ্যাথিক ওষুধ ব্যবহৃত হয় যেমনঃক্যান্তারিস, এপিস মেল, লাইকোপেডিয়াম, কুপপ্রাম, বার্বারিস, কুপ্রাস আর্স ইত্যাদি রোগের লক্ষণ অনুযায়ী ওষুধ ব্যবহার করলে ভালো একটা ফলাফল পাওয়া যায়। সে ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে ভালো হয়।
কিডনি রোগীর খাদ্য তালিকা
যেসব ফল খাওয়া যাবে প্রতিদিন সেগুলো হলো আপেল, ১/২ পেয়ারা, ১/২ নাশপতি, ২ থেকে ৪ টুকরা পাকা পেঁপে, ২ থেকে ৪ টুকরা আনারস, ১/২ কমলা, বেল প্রতিদিন যে কোন প্রকারের ফল খাবেন 50 থেকে 100 গ্রাম।
যেসব শাকসবজি খাওয়া যাবে
লাউ শাক, ডাটা শাক, কলমি শাক, লাল শাক এই শাক গুলো খাওয়া যাবে। পটল চাল কুমড়া, ডাটা, লাউ, শশা , চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গা। যেসব সবজি সিদ্ধ পানিতে ফেলে রান্না করতে হবে। মিষ্টি কুমড়া কাঁচা কলা, গাজর, টমেটো, মুলা মিষ্টি কুমড়া করলা, কাচা পেপে।
যেসব শাকসবজি খাওয়া যাবে না
দেঁড়শ, বরবটি মিষ্টি আলু, পঁই শাক, ধনে পাতা, পালং শাক, কচু, সজনে এইসব সবজি খাওয়া যাবেনা।
যেসব ফল খাওয়া যাবে না
কাঁঠাল বড়ই লেবু আনার কামরাঙ্গা কলা পাকা আম বড়ই আমরা এগুলো খাওয়া যাবে না।
যেসব খাবার খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে
কিডনি রোগের ঔষধ কি বিভিন্ন প্রকার ডাল শুকনো ফল বাদাম কাজু বাদাম খেজুর বিচি জাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে। গরু, খাসী, ভেড়া মহিষ, এদের মগজ কলিজা মাংস সামুদ্রিক মাছ সামুদ্রিক মাছের ডিম চিংড়ি মাছ বাদ দিতে হবে। ডাবের পানি বা নারকেলের তৈরি খাবার বাদ দিতে হবে। লবণের তৈরি যেসব খাবার এগুলো বাদ দিতে হবে। চানাচুর চিপস, আচার, শুটকি, পনির সকল ফর্মুলা জাতীয় খাদ্য যেমন হরলিক্স কোমল পানীয় সেভেন আপ, কোক কোলডিংক্স জাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে।
Dhruba Tech News